
ক্যান্সার কী?
- অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধি:
- স্বাভাবিক কোষগুলি একটি নিয়ন্ত্রিত উপায়ে বৃদ্ধি পায়, বিভক্ত হয় এবং মারা যায়। ক্যান্সার এই প্রক্রিয়াটিকে ব্যাহত করে।
- ক্যান্সার কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায় এবং বিভক্ত হয়, যা পিণ্ড বা টিউমার তৈরি করে।
- জেনেটিক ভিত্তি:
- ক্যান্সার মূলত পরিবর্তিত জিনের একটি রোগ। ডিএনএ-তে মিউটেশন অস্বাভাবিক কোষের আচরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
- এই মিউটেশনগুলি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হতে পারে, পরিবেশগত কারণ (যেমন বিকিরণ বা রাসায়নিক) দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে বা এলোমেলোভাবে ঘটতে পারে।
- মেটাস্ট্যাসিস:
- ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা (মেটাস্ট্যাসিস)।
- ক্যান্সার কোষগুলি মূল টিউমার থেকে ভেঙে যেতে পারে, রক্ত প্রবাহ বা লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারে এবং দূরবর্তী অঙ্গগুলিতে নতুন টিউমার তৈরি করতে পারে।
ক্যান্সারের প্রকারভেদ:
- ক্যান্সারগুলি জড়িত কোষের ধরন এবং তারা যে স্থান থেকে উৎপন্ন হয় তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। সাধারণ বিভাগগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কার্সিনোমা: ত্বক বা অভ্যন্তরীণ অঙ্গের আস্তরণকারী টিস্যুতে শুরু হয়।
- সারকোমা: হাড়, পেশী এবং চর্বির মতো সংযোগকারী টিস্যুতে শুরু হয়।
- লিউকেমিয়া: অস্থি মজ্জার মতো রক্ত-গঠনকারী টিস্যুতে শুরু হয়।
- লিম্ফোমা এবং মাইলোমা: ইমিউন সিস্টেমের কোষে শুরু হয়।
- স্তন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং কলোরেক্টাল ক্যান্সারের মতো অনেক নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার রয়েছে।
কারণ এবং ঝুঁকির কারণ:
- অনেক কারণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
- তামাক ব্যবহার: অনেক ক্যান্সারের একটি প্রধান কারণ।
- কার্সিনোজেনগুলির সংস্পর্শ: যেমন অ্যাসবেস্টস, বিকিরণ এবং কিছু রাসায়নিক।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাব।
- জেনেটিক কারণ।
- কিছু সংক্রমণ: যেমন এইচপিভি এবং হেপাটাইটিস।
- বয়স।
লক্ষণ এবং উপসর্গ:
- ক্যান্সারের লক্ষণগুলি প্রকার এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। কিছু সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- অজানা ওজন হ্রাস।
- ক্লান্তি।
- শরীরের যে কোনও অংশে পিণ্ড বা ঘন হওয়া।
- মল বা মূত্রাশয়ের অভ্যাসের পরিবর্তন।
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা স্বরভঙ্গ।
- ত্বকের পরিবর্তন।
চিকিৎসা:
- ক্যান্সারের চিকিৎসা ক্যান্সারের ধরন, পর্যায় এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে। সাধারণ চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
- সার্জারি: টিউমার অপসারণ করতে।
- কেমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ মারার জন্য ওষুধ ব্যবহার করতে।
- বিকিরণ থেরাপি: ক্যান্সার কোষ মারতে উচ্চ-শক্তির রশ্মি ব্যবহার করতে।
- ইমিউনোথেরাপি: শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে।
- লক্ষ্যযুক্ত থেরাপি: নির্দিষ্ট ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে এমন ওষুধ ব্যবহার করতে।
- উপশমকারী যত্ন: রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে।
প্রতিরোধ:
- জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে:
- তামাক এড়ানো।
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম।
- অতিরিক্ত সূর্য এক্সপোজার থেকে ত্বক রক্ষা করা।
- প্রস্তাবিত স্ক্রীনিং এবং টিকা গ্রহণ করা।
মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে ক্যান্সার একটি খুব জটিল অবস্থা, এবং আপনার যদি কোনও স্বাস্থ্য উদ্বেগ থাকে তবে আপনার সর্বদা একজন চিকিৎসা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।